‘দেখো আমি বাড়ছি মাম্মি’; তাই তো, গুবলু ছানা কত জলদি বড় হয়ে উঠছে! এবার শুধু হাত পা নেড়ে আর প্যাঁ-পোঁ আওয়াজ করে অন্যের ওপর নির্ভরশীল হয়ে থাকবে না মোটেই। ডায়াপারে নিত্যকর্মগুলি করতেও তার একটু লজ্জা লাগবে বই কি। তা হলে উপায়? সময় চলে এসেছে বাচ্চাকে নির্দিষ্ট সময়ে পটির জায়গায় পটি করানোর। সাধারণত ১৮-৩০ মাস বয়স, বাচ্চাদের পটি ট্রেনিং দেওয়ার আদর্শ সময়। চঞ্চল দস্যিটার মধ্যে কীভাবে গড়ে তুলবেন এই সু অভ্যাস? একটু ধৈর্য, একটু বুদ্ধি আর একটু ফন্দিফিকির; ব্যাস, কেল্লাফতে! কয়েকটা দিন পরেই দেখবেন, আর ডায়াপার পাল্টাতে হচ্ছে না,সোনামণি নিজেই আপনাকে ডাকছে তার পটির সময়। ওই ছোট্ট মাথায় এতো সময়জ্ঞান বা বোধবুদ্ধি কীভাবে আসবে, তাই নিয়ে ভেবে পাগল পাগল লাগছে বুঝি? এই ৭টি কৌশলের সাহায্য নিয়ে দেখুন তো একবার! (7 ways to potty train your child when your he/she is is ready in Bangla. Bachhar potty training-er upay. When and How to Start Potty Training Your Toddler)
পটি করা যে খুব সাধারণ ও স্বাভাবিক একটা ঘটনা, এটা বাচ্চাকে বোঝানোর চেষ্টা করুন। সবাইকেই পটি করতে হয় বা পটি করা উচিত, এই ধারণা যেন ওর কচি মনে গেড়ে বসে। এর জন্য আপনি সাহায্য নিতে পারেন নানা ধরনের বইয়ের। বাচ্চাকে কীভাবে পটি করানোর ট্রেনিং দেবেন, সে বিষয়ে ছবি আঁকা অনেক বই পাওয়া যায়। ছবি দেখিয়ে বাচ্চাকে গল্প করে করে বোঝান। কোনও মজার কার্টুন চরিত্র বাচ্চার খুব পছন্দ, তার নাম ধরে গল্প করে বলুন যে, তাকেও পটি যেতে হবে, নিজে নিজে পটি করতে হবে। এতে পটি করা সম্বন্ধে বাচ্চার আগ্রহ জন্মায়।
বাজারে অনেক নামী কোম্পানির পটি করানোর জায়গা কিনতে পাওয়া যায়। বাচ্চার বসতে আরাম হবে, বেশিক্ষণ বসলেও বাচ্চার পিঠে বা কোমরে ব্যথা হবে না, এরকম পটির জায়গা কিনুন। প্রথম দিকে, বাচ্চাকে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় বেশিক্ষণ বসতে হতে পারে। তাই পটির চেয়ার আরামদায়ক না হলে বাচ্চা বসতে চাইবে না। আকার ও ওজন দেখে নিন, যাতে বাচ্চার পটি করানোর জায়গা বাইরে গেলে নিয়ে যেতে পারেন।
প্রত্যেকদিন সকালে, বিকেলে সময় ধরে বাচ্চাকে পটি করতে বসান। প্রত্যেকবার খাওয়ার পরে একবার করে পটিতে বসিয়ে দিন। হয়তো বাচ্চা পটি করবে না বা একটু পরেই উঠে যাবে; কিন্তু পটিতে বসার অভ্যাস তৈরি হয়ে যাবে।
বাচ্চা পটির জায়গায় পটি করলে, হাততালি দিন বা ওকে একটু আদর করে দিন। পুঁচকেটা যাতে বুঝতে পারে যে, ওর এই কাজে আপনি আনন্দ পেয়েছেন এবং ওর প্রশংসা করছেন। পটি করলেই কোনও পুরষ্কারের লোভ দেখাবেন না। কারণ, বাচ্চার মনে এই ধারণা গড়ে উঠতে পারে যে, সে কিছু করলেই তাকে পুরষ্কার পেতে হবে। যখন তখন অপ্রয়োজনীয় পুরষ্কার দেওয়ার মানসিকতা কচি মনে লোভ ও অহেতুক আবদার বাড়িয়ে তোলে। তাই আপনার হাসি, আদর করে দেওয়া, হামি খাওয়া এগুলো ভালো কাজের উপহার হিসেবে যথেষ্ট।
আপনি নিজে বাথরুম যাওয়ার সময় ওকে বলে যান বা কেউ বাথরুম থেকে বেরিয়ে এলে তার পিঠ চাপড়ে দিন। বাচ্চা বুঝবে যে বাথরুমে গিয়ে যে কাজগুলো করা হচ্ছে, সেটা প্রশংসনীয়।
বাচ্চা ছোট অবস্থায় পটি করার পরে নিজে নিজে পরিষ্কার হতে পারে না। বাচ্চাকে পরিষ্কার করানোর সময় প্রত্যেকটি ধাপ ওকে মুখে বলুন এবং বোঝান যে, এইভাবে করতে হয়। পরিষ্কার করে দেওয়ার পরে লিকুইড সাবান দিয়ে নিজের হাত পরিষ্কার করুন বাচ্চার সামনেই। বাচ্চার হাতে কোনও নোংরা না লাগলেও ওর হাতও একটু ধুইয়ে দিন।
সবথেকে ভালো হয়, যদি আপনি বাথরুমে পটির জায়গা রেখে পটি করান। এতে বাচ্চা অস্বস্তি বোধ করবে না আবার বড়রা বাথরুমে যায়, সেই অনুকরণে জলদিই পটির অভ্যাস করে নেবে। নিতান্ত বাথরুমে না হলে, একটু আড়াল খুঁজে বাচ্চাকে পটিতে বসিয়ে দিন। (Step by Step Tips: Ways To Potty Train Your Child)
বাচ্চার পটি ট্রেনিং বা টয়লেট ট্রেনিং এর কিছু টিপস, শিশুর পটি ট্রেনিং, ৭টি ধাপে বাচ্চার পটি ট্রেনিং করে তুলুন সহজ। (Ways to potty train your child in Bangla)
একজন মা হয়ে অন্য মায়েদের সঙ্গে নিজের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিতে চান? মায়েদের কমিউনিটির একজন অংশীদার হয়ে যান। এখানে ক্লিক করুন, আমরা আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করব।
null
null