#ISupportBreastfeeding – Bengali
লজ্জার নয়, সংকোচেরও নয়। প্রকাশ্য়ে স্তন্য়পান করানো নিয়ে আমাদের সমাজের চিরাচরিত ধ্য়ান-ধারণাটা বদলেরই সময় এসেছে এবার।
স্তন্য়পান করানো যে আর পাঁচটা স্বাভাবিক কাজের মধ্য়েই পড়ে, এটা মেনে নিতে বড্ড যেন অসুবিধা হয় আমাদের। শুধু প্রত্য়ন্ত অঞ্চলগুলিতেই নয়, খাস শহরেও এই একই ধারণা। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে পরের পর ক্য়াম্পেন, হেলথ এজেন্সিগুলোর একের পর এক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও প্রকাশ্য়ে স্তন্য়পান করানো এখনও নিন্দারই বিষয় হয়ে আছে এই সমাজে।
বাচ্চা কাঁদছে তো কাঁদতে দাও। লজ্জা নিবারণই তোমার প্রথম কাজ! ‘সমাজ সংস্কারকদের’ এমন ফতোয়ায় লাভটা আসলে কাদের হয়? অনেক ক্ষেত্রে আজও মেয়েদের বিচার-বুদ্ধির বিবেচনা হয় ঠিক কতটা লম্বা ঘোমটা তারা টেনেছে তার উপর। অনেক পুরুষই আছেন, স্তন্য়পান করানোর প্রয়োজনীয়তা যাঁরা খুব বোঝেন, কিন্তু তাও যেন ‘সাহস’ পান না। সবার কাছেই যেন একটাই সমাধান, আগে ঘরে চলো, তারপর। শুধু যে পুরুষের ‘কুনজরের’ ভয় তাই নয়, অন্য় বাচ্চাদের সামনেও স্তন্য়পান করানো যেন খারাপ কোনও কাজ। বাচ্চাকে সামলানোর সমস্ত দায়িত্বও এদিকে তোমার উপর। তার কান্না, তার খিদে মেটানোর ভারও তোমার। তুমি যে মা! অগত্য়া কী? ঘরবন্দি হয়ে দিন কাটাও।
তবে না, এসব আর নয়। শুধু মহিলাদেরই সচেতনতা নয়, পুরুষদের সহযোগিতায় এই প্রতিবন্ধকতা কেটে যাচ্ছে ধীরে ধীরে। বাড়ি ফেরা অবধি আর অপেক্ষা নয়, বাচ্চা কাঁদলে তাকে তোমাকেই সামাল দিতে হবে। সে প্রকাশ্য়েই হোক কিংবা গোপনে! ঘোমটার দৈর্ঘ্য় দিয়ে তোমার বিচার-বুদ্ধি বিবেচনা করার দিন ফুরিয়েছে। সমস্ত পুরুষই খারাপ নজর নিয়েই চেয়ে আছে, এমন নয়। ফিরে তাকাও, আমাদের আশপাশের অধিকাংশ মানুষই তোমায় সম্মান করবে, তোমার সিদ্ধান্তকে কুর্নিশ জানাবে। আর যারা চিন্তায়-মননে এখনও এগোতে পারেনি। তাদের কথাটা নাই বা ভাবলে তুমি।
দেরিতে হলেও সচেতনতা যে জাগছে একটু একটু করে, আশার কথা এটাই। অতীতের সমস্য়া আলগা হয়েছে, রাখঢাকও কমেছে খানিক। আরও একটু সহযোগিতার হাত বাড়ালে হঠাৎ প্রয়োজনে, প্রকাশ্য স্থানে স্তন্যপান করাতে গিয়ে ‘অবাঞ্ছিত দৃষ্টির’ শিকার হতে হবে না ভবিষ্যতের কোনও মাকে। এমনই এক মায়ের আবেদন শুনে সম্প্রতি নড়ে বসেছে দিল্লির হাইকোর্ট। এ শহর ভাববে কবে?
বদলানোর সময় কিন্তু এখনই।