দ্বিতীয় সন্তানের ক্ষেত্রে অনেক কাজই আলাদা করেন মায়েরা; জানেন কি, কী কী সেগুলো?

দ্বিতীয় সন্তানের ক্ষেত্রে অনেক কাজই আলাদা করেন মায়েরা; জানেন কি, কী কী সেগুলো?

দ্বিতীয়বার সন্তানের মা হওয়া কিন্তু অনেকটাই আলাদা প্রথম সন্তানের জন্মের থেকে। যে সব মহিলারা একবার সন্তানের জন্ম দিয়েছেন, দ্বিতীয়বার গর্ভধারণ থেকে শুরু করে সন্তানের জন্ম ও তার পরবর্তী সময়েও তিনি অনেক সাবলীল ও চিন্তামুক্ত থাকেন। সবার আগে আসে অভিজ্ঞতা। দ্বিতীয় সন্তানের মা হওয়ার সময়, এই পূর্ব অভিজ্ঞতা মা কে অনেক বেশি বাস্তববাদী এবং স্বাবলম্বী করে তোলে। সন্তানের জন্য মায়ের ভালোবাসার হেরফের কোনও দিনই হয় না, কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টে যায় এই দ্বিতীয় সন্তানের ক্ষেত্রে। মায়েরা দ্বিতীয় সন্তানের ক্ষেত্রে কিছু কিছু কাজ আলাদা করে থাকেন। দেখে নিন একনজরে। (Dwitio sontaner khetre ma ki ki alada kore thaken. Things You Should Be Doing Differently With The Second Baby in Bangla)

মায়েরা দ্বিতীয় সন্তানের ক্ষেত্রে কিছু কিছু কাজ আলাদা করে থাকেন; দেখে নিন একনজরে! (Things You Should Be Doing Differently With The Second Baby)

#1. অনেক বেশি চিন্তামুক্ত থাকা (More relaxed)

প্রথম বাচ্চার ক্ষেত্রে নতুন মা সব কিছুতেই বড্ড বেশি উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। বাচ্চার কান্নার মানে বুঝতে গিয়ে নিজেই শুরু করে কান্নাকাটি। সামান্য শরীর খারাপ হলে বাচ্চাকে কোলে নিয়ে সারারাত কাটিয়ে দিতে পারে। শিশুর খাবার থেকে শুরু করে চুল ধোয়ানোর শ্যাম্পু, সবকিছুই যেন অতি উত্তম হয়, এই চিন্তাতেই অস্থির থাকে সারাক্ষণ। দ্বিতীয় সন্তানের ক্ষেত্রে, তারা বাচ্চার শরীর খারাপের উপসর্গগুলো বোঝে এবং জানে যে বাচ্চা জলদিই সুস্থ হয়ে উঠবে। বাচ্চার কান্নার মানে স্বচ্ছন্দে বুঝতে পারে। প্রথম বাচ্চা বড় করার অভিজ্ঞতা তাদের মধ্যে এই আত্মবিশ্বাস এনে দেয়।

#2. গর্ভাবস্থায় তুলনামূলক ভালো জীবনযাত্রা মেনে চলে (Better lifestyle)

ছোট ছোট ভুল থেকেই মানুষ শিখতে শুরু করে আর তার অভিজ্ঞতাও বাড়ে। দ্বিতীয়বার গর্ভধারণের সময় মা জানে যে, কি ধরনের খাবার খেতে হবে বা কতটুকু শারীরিক পরিশ্রম করা তার ও গর্ভস্থ সন্তানের জন্য ভালো।

#3. অন্যের ওপর নির্ভরশীল থাকতে হয় না (No need to depend on others)

প্রত্যেক মুহূর্তে পরামর্শ বা উপদেশ কিছুরই প্রয়োজন হয় না মায়ের। প্রথম বাচ্চার ক্ষেত্রে যে যা বলেছেন, মা মেনে নিয়েছে। ঠিক বা ভুল বিচার করার স্পর্ধা তখন সে দেখাতে পারেনি। কিন্তু, একটা বাচ্চার জন্ম দিয়ে সে বুঝে গেছে বাচ্চার জন্য কী ঠিক আর কী ভুল। নিজের ও বাচ্চার সম্বন্ধে সমস্ত সিদ্ধান্ত মা নিজেই নিতে পারে।

#4. নোংরা আর জীবাণু নিয়ে বাতিক অনেকটাই কমে যায় (Doesn’t worry too much about germs)

একজন নতুন মা সবসময় ভয় ভয় থাকে। এই বুঝি একরত্তি ছানাটার পেট খারাপ হয়ে গেলো; পারলে সে পুরো বাড়িটাই জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করে। কিন্তু বাস্তবে কি সেটা সম্ভব? বাচ্চা হামা দেবে, মাটিতে খেলনা ছুঁড়ে ফেলবে, আবার সেই খেলনাই মহানন্দে মুখে দেবে। প্রথম সন্তানের ক্ষেত্রে এই জীবাণু আর দূষণ নিয়ে মায়ের বাতিক মনে হয় একটু বেশিই থাকে। পরের সন্তানের ক্ষেত্রে মা জানে যে, মাটিতে খেলনা পড়ে গেলে তা আর ধোয়ার প্রয়োজন নেই বা বাচ্চার খাওয়ার পাত্রও বারবার গরম জলে ফোটানোর প্রয়োজন হয় না। শুধু এটুকুই খেয়াল রাখা, যেন বাচ্চা নোংরা আবর্জনা তুলে মুখে না পুরে দেয়। Things You Should Be Doing Differently With The Second Baby.

#5. বেশি জামাকাপড় কিনতে হয় না (Buy less clothes)

দ্বিতীয়বার গর্ভবতী হলে অবশ্যই জামাকাপড় কেনার খরচ অনেকটা কমে যায়। তা সে মায়ের জন্যই হোক বা বাচ্চার জন্য। মায়ের পুরনো ম্যাটারনিটি পোশাক সে বাড়িতে ব্যবহার করতে পারে আর প্রথম সন্তানের ছোট হয়ে যাওয়া জামাকাপড় দিব্যি দ্বিতীয় পুঁচকেটার গায়ে হয়ে যায়। তাই কিছু কিছু জামা কিনলেই মা ও বাচ্চা দুজনেরই হয়ে যায়। এর ফলে, অর্থেরও সাশ্রয় হয়।

#6. মন ভালো থাকে (Enjoy pregnancy)

প্রথম সন্তানের ক্ষেত্রে সাধারণত মা সারাক্ষণ সন্তানের ব্যাপারেই ভাবতে থাকে। অহেতুক চিন্তা আর চিন্তার কেন্দ্রবিন্দু একটাই থাকায় মনের ওপর প্রভাব পড়ে। দ্বিতীয় সন্তান গর্ভে থাকা অবস্থায় মা যেহেতু প্রথম বাচ্চাটিরও দেখভাল করে, তাই অহেতুক উদ্বেগ সহজে দানা বাঁধতে পারে না। প্রথম সন্তানকে সময় দেওয়া, তার যত্ন নেওয়া, মায়ের মনকে অন্যদিকে রাখতে সাহায্য করে।

#7. যখন তখন ডাক্তার ডাকা বন্ধ (Doesn’t call a doctor often)

একজন নতুন মা তার বাচ্চার স্বাস্থ্য নিয়ে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি চিন্তিত থাকে। বাচ্চার একটু কিছু শারীরিক অস্বস্তি হলেই তার মনে হয় ডাক্তার দেখানোর কথা বা ওষুধ খাওয়ানোর কথা। বাচ্চাকে আরাম দিতে মা অস্থির হয়ে ডাক্তারকে যখন তখন ফোন করতেও দ্বিধা বোধ করেন না। দ্বিতীয় সন্তানের ক্ষেত্রে মা তার শরীর খারাপের লক্ষণ এবং গুরুত্ব বোঝেন। কোন সময় ডাক্তার দেখানো দরকার তার ধারণা হয়ে যায়।

#8. বেবি কটের ব্যবহার তাড়াতাড়ি শুরু হয় (Starts using baby cot sooner)

প্রথম সন্তান মানুষ করার ক্ষেত্রে যেহেতু মায়ের পুরো সময়টাই বাচ্চাকে কেন্দ্র করে থাকে, তাই বাচ্চা বেশীরভাগ সময়ই মায়ের কোলে থাকে বা মায়ের সাথে এক বিছানায় থাকে। দ্বিতীয় বাচ্চার ক্ষেত্রে বেবি কট বা বাচ্চার আলাদা খাটের ব্যবস্থা তুলনামূলক জলদি হয়ে যায়। আরও একটি সন্তানের দেখভাল করতে হয় বলে মাকে দুই বাচ্চাকেই সমান ভাবে গুরুত্ব দিতে হয় এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও নিতে হয়। (Things You Should Be Doing Differently With The Second Baby)

একজন মা হয়ে অন্য মায়েদের সঙ্গে নিজের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিতে চান? মায়েদের কমিউনিটির একজন অংশীদার  হয়ে যান। এখানে ক্লিক করুন, আমরা আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করব।

null

null