সারা বাড়ি দাপিয়ে বেড়ানো দস্যিটা যদি সর্দি-জ্বরের চোখরাঙানিতে কাবু হয়ে পড়ে বা হামা দিয়ে ঘুরে বেড়ানো ছটফটে পুঁচকিটা যদি সারাদিন নাকের জলে, চোখের জলে অস্থির হয়ে যায়, কোন মা বাবার ভালো লাগে বলুন তো? আর যদি আপনার বাচ্চা পিঠে বোঝা টেনে স্কুলে যাওয়া শুরু করে দিয়েছে, তা হলে তার স্কুল বন্ধ, খেলাও বন্ধ। যেসব বাড়িতে বাচ্চা রয়েছে, এইসব দৃশ্যগুলো বড্ড পরিচিত বাড়ির অন্য সদস্যদের কাছে। আর বাড়ির বাচ্চার শরীর খারাপ মানে, যেন বাড়িটার ইট-পাথরেরও শরীর খারাপ হয়। বাচ্চাকে যত জলদি সম্ভব সুস্থ করে তুলে, বাড়ির এবং সর্বোপরি নিজেদের ধড়ে প্রাণ আনতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন বাবা মায়েরা। ডাক্তারের কাছে ছোটেন বা অ্যান্টিবায়টিক ওষুধ কিনে আনেন দোকান থেকে। আর আজকাল পরিবেশ দূষণের কারণেই হোক বা ঋতু বদলের খেয়ালিপনাই হোক, বাচ্চারা খুব সহজেই সর্দি কাশিতে জব্দ হয়ে পড়ে। কিন্তু জানেন কি, আপনার বাড়ির রান্নাঘরেই এমন কিছু উপাদান আছে, যা বাচ্চাকে এই ঠান্ডা লাগার হাত থেকে বাঁচাতে পারে? (Natural ingredients to keep your baby away from cold and cough in Bengali)
তেল মালিশ (Oil massage)
এক কাপ সরিষার তেলে দুই কোয়া রসুন ও অল্প কালো জিরে দিয়ে গরম করুন। এবার এই তেল বাচ্চার বুকে, পিঠে, পায়ের তলায়, হাতের তালুতে ভালো করে মালিশ করে দিন। বাচ্চার গায়ে তেল মালিশ করার আগে নিজের কনুইয়ে ওই তেল লাগিয়ে উষ্ণতা দেখে নিন।
হলুদের পেস্ট (Turmeric paste)
যদি মনে হয়, বাচ্চার অল্প ঠান্ডা লেগে গেছে, তা হলে সেটা আর বাড়তে দেবেন না। ঈষদুষ্ণ গরম জলে হলুদ মিশিয়ে পাতলা পেস্ট তৈরি করে নিন। এবার ওই হলুদ পেস্ট বাচ্চার বুকে, কপালে ও পায়ের চেটোতে লেপে দিন। কিছু সময় পরে মুছে দিন। হলুদ শরীর গরম করে এবং শরীরে সর্দি বা শ্লেষ্মা জমে গেলে সেটা গলিয়ে বার করে দেয়।
বুকের দুধ (Breast milk)
যেসব বাচ্চারা বুকের দুধ খায় বা ৬ মাসের কম বয়স, তাদের জন্য সবরকম শারীরিক পরিস্থিতিতে মায়ের দুধই শ্রেষ্ঠ। মায়ের দুধ অনেকরকম রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা রাখে। তাই ৬ মাস কম বয়সি শিশু যেন মায়ের দুধই খায় সেদিকে লক্ষ্য রাখুন।
হলুদ দেওয়া দুধ (Milk and Turmeric)
হলুদ ভীষণ ভালো জীবাণুনাশক উপাদান হিসেবে কাজ করে এবং সর্দি-কাশিতে খুবই কার্যকরী। সর্দি কমাতে তো বটেই, ঠান্ডা লাগার ধাত কমাতেও হলুদ সাহায্য করে। বাচ্চা যদি গ্লাসে করে দুধ খেতে পারে, তা হলে তাকে এক গ্লাস ঈষদুষ্ণ দুধের সাথে আধ চামচ হলুদগুঁড়ো মিশিয়ে খাওয়ান। পুরো শীতকালটাই এই হলুদ দেওয়া দুধ আপনি বাচ্চাকে খাওয়াতে পারেন। রেসিপি থাকল এখানে>
তুলসীপাতা, আদা ও মধু (Basil leaves, Ginger and Honey)
সর্দি-কাশি নিরাময়ে এই তিনটি জিনিসের গুরুত্ব জানেন না, এমন মানুষ মনে হয় খুব কমই আছেন। আমাদের মা-দিদিমারা সারাটা শীতকাল এই টোটকা কাজে লাগিয়ে বাড়ির বাচ্চাদের সহজে অসুস্থ হতে দিতেন না। আপনার বাচ্চা যদি চিবোতে পারে, তা হলে আদা ও তুলসীপাতা হামানদিস্তায় অল্প থেঁতো করে নিন, এবার এর সাথে পরিমাণমতো মধু মিশিয়ে বাচ্চাকে প্রত্যেকদিন সকালে খাওয়ান।
আদা, গোলমরিচ,তেজপাতা, দারচিনি দিয়ে চা ( Ginger, Pepper, Bay Leaves and Cinnamon Concoction)
না, ভয় পাবেন না। এই মিশ্রণে চা মেশানোর কোনও প্রয়োজন নেই। তবে বাচ্চাকে বলতেই পারেন আপনি ওর জন্য ঝাল ঝাল চা বানিয়ে এনেছেন। বড়রা যেমনভাবে কাপে চা খায়, সেভাবে ওকেও দিন। এতে বড়দের অনুকরণ করে বাচ্চা চা ভেবেই মিশ্রণটি খাবে। এক কাপ জলে আদা কুচি, গোলমরিচ গুঁড়ো, তেজপাতা ও অল্প দারচিনি দিয়ে ভালো করে ফোটান। তারপর মিশ্রণটা ছেঁকে নিন। সামান্য ঠান্ডা হয়ে গেলে মধু মিশিয়ে বাচ্চাকে দিন। মিশ্রণ যেন খুব বেশি গরম না হয় বা বাচ্চা খেতে পারে, সেদিকে লক্ষ্য রাখুন।
বাড়িতে তৈরি করুন চ্যবনপ্রাশ (Homemade Chawanprash)
খুব সহজেই বাড়িতে বানিয়ে নিতে পারেন এই চ্যবনপ্রাশ। চ্যবনপ্রাশ শরীর গরম করে, তাই শীতকালে প্রত্যেকদিনই বাচ্চাকে এই চ্যবনপ্রাশ খাওয়াতে পারেন
উপকরণ (Ingredients)
পদ্ধতি (Method)
যেসব ফল বা সব্জিতে ভিটামিন সি আছে, সেগুলো খেলে সর্দি হওয়ার ধাত অনেকটাই কমে যায়। বাচ্চাকে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল যেমন কমলালেবু খাওয়ান।
একজন মা হয়ে অন্য মায়েদের সঙ্গে নিজের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিতে চান? মায়েদের কমিউনিটির একজন অংশীদার হয়ে যান। এখানে ক্লিক করুন, আমরা আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করব।
null
null