সন্তান পৃথিবীর আলো দেখার পর থেকেই মায়ের চিন্তার যেন আর শেষ নেই। বাচ্চার বাড়- বৃদ্ধি ঠিকঠাক হচ্ছে তো, প্রয়োজনীয় পুষ্টি সে পাচ্ছে তো? এরকম হাজারো চিন্তায় মায়ের রাতের ঘুমই যেন উধাও হয়ে যাচ্ছে। ৬ মাস পর্যন্ত বাচ্চাদের যেহেতু বুকের দুধই একমাত্র সুষম খাবার, তাই এই কয়েকমাস হয়তো খাবার বা খাবারের পুষ্টিগুণ নিয়ে মাকে খুব বেশি চিন্তা করতে হয় না। কিন্তু যেই বাচ্চা বড় হতে শুরু করে বা তার জিভের স্বাদ বদলানোর নিত্যনতুন খেয়াল শুরু হয়, অনেক মায়েরাই বিব্রত হয়ে পড়েন। কী ধরনের খাবার বাচ্চাকে দিলে তার বাড়ন্ত বয়সের পুষ্টি সম্পূর্ণ হবে বা তার শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি হবে, এই চিন্তায় গালে হাত পড়ে মায়েদের। এখানে একটা কথা বলি, সুষম খাবারের ধারণাটা ঠিক কী বা কোন খাবারের প্রয়োজন কোথায়, এই ছোট্ট ছোট্ট বিষয়গুলো একটু জেনে রাখলে অহেতুক চিন্তা করে বলিরেখা বাড়াতে হবে না আপনাকে। বাচ্চার খাবারের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল ডিএইচএ। দেখে নিন এর ঘাটতিতে কী কী ক্ষতি হতে পারে আপনার শিশুর!
#1. ঘুমের সমস্যা: (Sleeping problem)
শিশুর বাড়-বৃদ্ধিতে প্রতিদিন একটা পর্যাপ্ত সময় ঘুম অবশ্য প্রয়োজন। ঘুমের অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ওর মানসিক স্বাস্থ্য শিশুকে নিয়মিত মাছ, কড লিভার অয়েল বা ডিএইচএ-তে ভরপুর অন্যান্য খাবার দিচ্ছেন তো?
#2. ঔদ্ধত্য ও আবেগপ্রবণতা:( Aggressiveness and emotional)
শিশু প্রচণ্ড জেদি, ঘ্যানঘেনে ও একগুঁয়ে হয়ে যায়। আচমকা ভীষণ রেগে যায় এবং ধৈর্য হারিয়ে ফেলে একটুতেই। শুধু শিশু অবস্থাতেই নয়, বাড়ন্ত ডিএইচএ-র এই কুপ্রভাবগুলি ক্ষতি করে শিশুর ভবিষ্যৎ জীবনেও।
#3. ডিস্লেক্সিয়া হওয়ার ঝুঁকি: ( Higher risk of dyslexia)
অক্ষর চিনতে অসুবিধারই পোশাকি নাম ডিস্লেক্সিয়া। গর্ভাবস্থার শেষ তিন মাস থেকে থেকে জন্মের ১-২ বছর পর্যন্ত ঝড়ের গতিতে হয় শিশুর মস্তিষ্কের প্রধান বিকাশ। এসময় শিশুর সার্বিক পুষ্টিতে তাই ডিএইচএ মাস্ট।
#4. স্কিজোফ্রেনিয়া হওয়ার ঝুঁকি: ( Increased risk of Schizophrenia)
ভবিষ্যতে স্কিজোফ্রেনিয়ার মতো ভয়ানক ও দীর্ঘমেয়াদী মানসিক রোগ হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। শিশুর পুষ্টি নিয়ে তাই বাড়তি সচেতন হন। জন্মের পর ৬ মাস পর্যন্ত ডিএইচএ-র অন্যতম উৎস বুকের দুধই দিন শিশুকে।
#5. কম বুদ্ধি ও বোধশক্তি: (Low I.Q and conginitive function)
শিশুর মস্তিস্ক ও স্নায়ুতন্ত্র গঠনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেয় ডিএইচএ। শরীরে এর ঘাটতি হলে শিশুর বুদ্ধির বিকাশ হয় না, থমকে যায় বিচার-বিবেচনা এবং স্বাভাবিক চিন্তাশক্তিও। রোজের খাবারে তাই ডিএইচএ চাই-ই চাই।
#6. ক্ষতিগ্রস্ত ফাইন মোটর স্কিল: (Reduced fine motor skill)
হাত ও চোখের একসঙ্গে কাজ করার ক্ষমতা ক্ষতিগ্রস্ত হয় পর্যাপ্ত ডিএইচএ-র অভাবে। কারণ, এটি মস্তিষ্কের কোষ ও স্নায়ুতন্ত্রের মধ্যে সমন্বয় রাখায় মুখ্য ভূমিকা নেয়। শিশুর রিফ্লেক্স বাড়াতে অপরিহার্য এই ফ্যাটি অ্যাসিডটি।