আপনি কি সদ্য মা হয়েছেন এবং বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন? প্রেগন্যান্সির পরে অনেক দিন কেটে গেলেও, কেন বারবার খিদে পাচ্ছে এই নিয়ে ভাবছেন, তাই তো? আপনার ছোট্ট সোনা যখন আপনার বুকের দুধ থেকেই পুষ্টি পাচ্ছে, তখন আপনার সঠিক খাদ্যতালিকা কী হওয়া উচিত তাই নিয়ে কি খুব চিন্তা হচ্ছে?
প্রেগন্যান্সির সময়ে কী খাওয়া উচিত এবং কী খাওয়া উচিত নয়, এ ব্যাপারে অনেক উপদেশ শোনা যায়। কিন্তু, বাচ্চার জন্মের পর, বাচ্চাই যেন ধ্যানজ্ঞান হয়ে ওঠে। আপনি যেহেতু বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন, এক্ষেত্রে আপনার শরীরেও সাধারণ অবস্থার তুলনায় বেশি ক্যালোরির প্রয়োজন হয়। এজন্যই এইসব মায়েদের ঘনঘন খিদে পায়।
শুধুমাত্র ক্যালোরি নয়, বুকের দুধ থেকে বাচ্চারা প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান যেমন ক্যালসিয়াম, আয়রন পেয়ে থাকে। যদি এইসময় মায়েরা পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যসম্মত খাবার না খায়, তা হলে তার নিজের শারীরিক ক্ষমতা কমে যেতে থাকে। সেজন্য বাচ্চাকে স্তন্য়পান করানোর দিনগুলোয় মায়েরও সঠিক ভাবে পুষ্টি নেওয়া খুবই আবশ্যক। আবার এটাও সত্যি যে, আপনার খাদ্যাভ্যাস যত ভালো হবে, আপনার বুকের দুধের গুণমান এবং পরিমাণও তত ভালো হবে।
সেজন্য, বাচ্চার যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি, আপনিও যাতে সঠিক ভাবে খাবার খান বা পুষ্টি নিতে পারেন, সেই বিষয়ে এখানে কিছু সহজ আলোচনা করা হলঃ
কিছু খাবার আছে, যারা গ্যালেকটাগোজ (galactagogue) নামে পরিচিত। এইসমস্ত খাবার বুকের দুধের পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে। বাঙালিদের জন্য এরকম অনেক কিছু আছে, যা তারা খাদ্যতালিকায় ঢোকাতে পারে, যেমন,
এছাড়াও, আরও অনেক কিছু আছে, যা আপনার বুকের দুধের পুষ্টিগুণ বাড়িয়ে আপনার বাচ্চার বেড়ে ওঠায় সাহায্য করতে পারে। এতে আপনার শরীরও সুস্থ থাকে। সেরকম কিছু খাবার হল,
ওপরে উল্লিখিত সমস্ত কিছু মাথায় রেখে, এখানে আপনার জন্য একটি খাদ্যতালিকা বানানো হল, যা বাচ্চাকে স্তন্যপান করানো কালীন তিনটি আলাদা পর্যায়ে আপনার কাজে লাগবে।
এই সময়ে আপনার শরীরও ধীরে ধীরে সুস্থ হতে থাকে। তাই, আপনার এমন কিছু খাওয়া প্রয়োজন যা সহজপাচ্য। বেশি পরিমাণে গ্যালেকটাগোজ (galactagogue), ফারমেনটেড ফুডস আর তরলজাতীয় খাবার খেলে এই সময়ে উপকার পাবেন।
এই সময়ে আপনি আপনার খাদ্যতালিকায় আরও অনেকরকম খাবার যোগ করতে পারেন। আপনার বাচ্চাও এই সময় বুকের দুধে অন্যরকম স্বাদ নেওয়ার জন্য তৈরি হয়ে যায়। যদিও, খাদ্যাভ্যাসে খুব বেশি রদবদল বারবার করা ঠিক হবে না। দুধের স্বাদ যেন প্রত্যেকদিন ভীষণভাবে পাল্টে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখুন।
যদি আপনার বাচ্চার পেটে ব্যথা হয় বা হজমে গোলমাল দেখা দেয়, তা হলে এটাও হতে পারে যে, আপনি নতুন কিছু খাওয়া শুরু করেছেন যা বাচ্চা হজম করতে পারছে না।
এই সময় আমিষ খাবার ও বেশি পরিমাণে ফল খাওয়া শুরু করতে পারেন। বেশি তেল-মশলা দেওয়া খাবার খাবেন না। বাচ্চা পাঁচ মাসের হয়ে গেলে, ভাজাভুজি জাতীয় খাবার খাদ্যতালিকা বা ডায়েটে আনতে পারেন। বাচ্চার বয়স পাঁচ মাস হবার পরেই এই খাবারগুলো খাওয়া ভালঃ
বুকের দুধের মাধ্যমে নতুন নতুন খাবারের স্বাদ পেলে, ৬ মাস বয়সের পর বাচ্চার বুকের দুধ খাওয়ার অভ্যেস ছাড়াতে সুবিধে হয়।
এই সময়ে বাচ্চা বুকের দুধ ছাড়াও অন্য খাবার খেতে শুরু করে। যদিও, বাচ্চা শক্ত খাবার খেতে শুরু করলেও একই পরিমাণে বুকের দুধ তাকে দিতে হতে পারে। সাত থেকে আট মাস বয়সের বাচ্চারা আস্তে আস্তে নতুন খাবারের স্বাদ বুঝে যায় এবং বুকের দুধ খাওয়া কমাতে শুরু করে।বাচ্চার হজমশক্তিও বেড়ে যায়। তাই, আট মাসের পর আপনি স্বাভাবিক খাওয়া-দাওয়া শুরু করে দিতে পারেন। অত্যধিক ঘি বা ফ্যাট জাতীয় খাবার খাওয়া আস্তে আস্তে কমিয়ে দিন।
একজন মা হয়ে অন্য মায়েদের সঙ্গে নিজের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিতে চান? মায়েদের কমিউনিটির একজন অংশীদার হয়ে যান। এখানে ক্লিক করুন, আমরা আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করব।
null
null