প্রথমেই বলে রাখি, আজকের এই প্রতিবেদন কিন্তু আমাদের অর্থাৎ মেয়েদের জন্য নয়। এই প্রতিবেদনটি আমাদের প্রত্যেকের নিজেদের ভালোবাসার মানুষটির জন্য, আমাদের পাশে ছায়া হয়ে থাকা আমাদের প্রত্যেকের জীবনসঙ্গীর জন্য। সময় বিশেষে সবরকম সাপোর্ট দেওয়া, মনোবল বাড়ানো এবং একজন উপযুক্ত বন্ধুর মতো পাশে থাকাই তো একজন উপযুক্ত সহধর্মিণীর কর্তব্য। তাই, এই প্রতিবেদনটি সব বন্ধুরা মন দিয়ে পড়ুন এবং আপনার সঙ্গীকেও পড়তে দিন। হতে পারে, আপনাদের কোনও সমস্যার সমাধান পেয়ে গেলেন এখানেই, বা আগামী সমস্যা এড়াবার হাল-হদিস পেয়ে সতর্ক হয়ে গেলেন এখন থেকেই। দুদিকেই আপনাদের দু’জনেরই লাভ। তাই না? Male Infertility: Causes and treatment or purusher bondhatyo in Bangla.
শুনতে আমাদের খারাপ লাগতে পারে, কিন্তু এখনও আমাদের সমাজের একাংশ মহিলাদেরই একটা বাচ্চা জন্ম দেওয়ার হর্তা কর্তা বিধাতা ভেবে থাকে। বাচ্চা হচ্ছে না, সব মহিলার দোষ; ছেলে না হয়ে মেয়ে হলো, তাও মহিলার দোষ। কিন্তু এমনটা যে একটুও না, সেটা আদৌ ক’জন জানেন? আর যারা জানেন, তারা মন থেকে কতটা মানেন তাতে বড্ড সন্দেহ আছে। নিশ্চয় জানেন, বিজ্ঞান এরকম বলে না। একটা বাচ্চার জন্ম অবশ্যই তার মা দেয়, কিন্তু তাকে সৃষ্টির পিছনে মা ও বাবা উভয়েরই গুরুত্ব সমান। অনেকদিন ধরে চেষ্টা করেও কনসিভ না করতে পারলে, আমাদের সমাজ প্রথমেই মহিলার দিকে আঙুল তোলে এবং বন্ধ্যার তকমা লাগিয়ে দেয়। জানেন কী? এই বন্ধ্যাত্ব মহিলাদের একচেটিয়া রোগ-সম্পত্তি নয়, পুরুষরাও ভুগতে পারেন বন্ধ্যাত্বের সমস্যায়। একজন পুরুষের শারীরিক সমস্যার কারণে সন্তানধারণে সম্পূর্ণ সক্ষম এক মহিলা কনসিভ করতে পারেন না। পুরুষদের বন্ধ্যাত্বের সমস্যা ও সমাধান সংক্রান্ত আলোচনা নিয়েই আজ এই প্রতিবেদন। নিজে পড়ুন এবং সঙ্গীকেও পড়তে দিন।
পুরুষদের বন্ধ্যাত্ব (purusher bondhatyo) আগে থেকে বোঝার কোনও উপায় আছে কী?
সাধারণত দেখা যায়, সন্তানধারণে অক্ষম দম্পতিদের মধ্যে ৩৫ শতাংশ ক্ষেত্রে মহিলা দায়ী থাকেন আর ৩৫ শতাংশ ক্ষেত্রে পুরুষ দায়ী থাকেন। বাকি ৩০ শতাংশের মধ্যে ২০ শতাংশ ক্ষেত্রে উভয়েই দায়ী থাকেন আর ১০ শতাংশর ক্ষেত্রে কোনও নির্দিষ্ট কারণ জানা যায় না। পুরুষদের এই বন্ধ্যাত্ব রোগ বোঝার একটাই লক্ষণ; প্রোটেকশন ছাড়া সম্পূর্ণ সুস্থ মহিলা সঙ্গীর সাথে বারবার সহবাস করার পরেও সন্তান না আসা।
আরও পড়ুন (Also Read): Reason for not getting pregnant
পুরুষদের মধ্যে বন্ধ্যাত্বের কারণগুলিকে আমরা মোটামুটি তিন ভাগে ভাগ করতে পারি;
#1. শারীরিক অসুস্থতা (Medical problems)-> পুরুষের বন্ধ্যাত্বের জন্য দায়ী শারীরিক সমস্যাগুলি হল; স্পার্ম-এর গুণগত মান ও পরিমাণ দুইয়ের ওপরই নির্ভর করে মহিলার কনসিভ করা। পুরুষের প্রতি মিলিলিটার সিমেনে ১৫ মিলিয়ন বা ১৫০ লাখের কম স্পার্ম থাকলে তাকে “লো স্পার্ম কাউন্ট” বলে। আর এই অসুস্থতাকে অলিগোজুসপারমিয়া (oligozoospermia) বলে।
#2. পরিবেশের প্রভাব (Environmental effect)-> আশেপাশের পরিবেশ ও কাজের জায়গার পরিবেশ পুরুষদের প্রজনন ক্ষমতায় বিশেষ ভূমিকা নেয়; যেমন,
#3. নিম্নমানের জীবনযাত্রা ও অন্যান্য (Lifestyle and others)->
আধুনিক চিকিৎসাশাস্ত্র অনেক উন্নত হওয়ায়, যে কোনও সমস্যার চিকিৎসা করানোর সুযোগও অনেক বেশি। পুরুষদের বন্ধ্যাত্ব রোগেরও বিশেষ চিকিৎসা হয়ে থাকে। বিশেষ অপারেশনের মাধ্যমে, হরমোনের ওষুধ প্রয়োগ করে চিকিৎসা করা হয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে পুরুষের স্পার্ম সংগ্রহ করে তারপরে সবথেকে ভালো গুণমানের কয়েকটি স্পার্ম বিশেষ উপায়ে বাছাই করে মহিলার শরীরে যোনিপথ দিয়ে বিশেষ উপায়ে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। চিকিৎসার পরেও স্বাভাবিক উপায়ে মহিলা কনসিভ করতে না পারলে এই পদ্ধতি বা IVF-এর সাহায্য নেওয়া হয়। অনেক ক্ষেত্রে নেওয়া হয় ডোনার স্পার্ম। তবে, এক্ষেত্রে দম্পতির সম্মতি নিয়েই সব চিকিৎসা করা হয়।
কিছু বিশেষ তথ্য পুরুষদের জন্য (Some more to remember)
সঠিক সময়ে সচেতন হলে চিকিৎসা সম্ভব বই কি। তাই নির্দিষ্ট সময়ের পরে কনসিভ না করলে দু’জনেই সবকিছু পরীক্ষা করিয়ে নিন। তাতে, বিভ্রান্তিও কম থাকে আর ফলও ভালো হয়।
আরও পড়ুন (Also Read): Female Infertility Casues and Remedies
একজন মা হয়ে অন্য মায়েদের সঙ্গে নিজের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিতে চান? মায়েদের কমিউনিটির একজন অংশীদার হয়ে যান। এখানে ক্লিক করুন, আমরা আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করব।
null
null