একরত্তি ছানার মায়ের কাছে প্রত্যেকটা দিনই একেকটা চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসে!
ছোট্ট শিশুকে সবকিছুই তো অতি যত্নে করিয়ে দিতে হয়। আবার সেই পুতুলের মতো প্রতিপক্ষটি সাইজে ওইটুকু হলে কী হবে, বিনা প্রতিবাদে কোনও কিছু মেনে নেওয়া সে পছন্দও করে না। তাকে খাওয়ানো, ঘুম পাড়ানো ছাড়াও মায়ের জন্য আরও একটা মস্ত কঠিন কাজ, স্নান করানো!
অবশ্য কিছু কিছু ভাগ্যবতী মা রয়েছে, যাদের ছানা বড়ই লক্ষ্মী। এতটাই যে, তারা স্নানের সময়টাই সবথেকে বেশি ভালোবাসে। মায়ের মুখে-জামায় সাবানের বুদবুদ ছুঁড়ে, স্নানের জায়গা থেকে চারদিকে জল ছিটিয়ে মায়ের কাজ বাড়িয়ে অনাবিল আনন্দ পায় সে। আর বাকিদের ছানারা স্নান করাতে গেলেই হয়তো চিৎকার জুড়লো বা মাথায় জল পড়তেই নাক ডেকে ঘুমিয়ে পড়লো। তখন বেচারি মা কী করে স্নান করায় বাচ্চাকে বলুন দেখি!
জানেন কি, স্নানের সময় কীভাবে বাগে আনবেন সদ্যোজাত খুদেগুলোকে? স্নানের সময়টা মা ও বাচ্চার কাছে কীভাবে হয়ে উঠবে সবথেকে আনন্দের আর আরামের? বলে দিচ্ছি চুপিচুপি; প্রয়োগ করে দেখুন তো!
আপাতত, সপ্তাহে ২-৩ বার, ৫-১০ মিনিট করে স্নানই নবজাতকের জন্য যথেষ্ট। তবে আপনার পুঁচকে যদি স্নানের সময়টা দারুণ উপভোগ করে, তা হলে রোজও করাতে পারেন। এর চেয়ে বেশি স্নান করালে লাভের চেয়ে ক্ষতির শঙ্কাই বেশি। হয়তো দেখলেন, নবজাতকের নমনীয় ত্বকই শুষ্ক হয়ে গেল দিনে দিনে। যদি গোপনাঙ্গ পরিষ্কার করার প্রশ্ন হয়, তা হলে সেটা স্নান না করিয়েও সারতে পারেন। কুসুম গরম জল আর নরম তুলো দিয়ে সময়ে সময়ে গোপনাঙ্গ পরিষ্কার করে নিলেই হলো।
দিনে যে কোনও সময়ই আপনার সদ্যোজাত শিশুকে স্নান করাতে পারেন আপনি। এমন সময়ই বাছুন, যখন তেমন কোনও কাজ থাকবে না আপনার হাতে। খাওয়ার ঠিক পর পর বা খিদে পাওয়ার সময়গুলোয় স্নান না করানোই ভালো।
পরপর কিছুদিন স্নান করানোর পর যদি দেখেন, স্নানেই বেশ আরাম পাচ্ছে সে, তা হলে নবজাতককে ঘুম পাড়ানোর কৌশল হিসেবে এই স্নানকেই হাতিয়ার করতে পারেন আপনি। সন্ধের পর কুসুম গরম জলে স্নান করিয়ে দিন আপনার ছোট্ট সোনাকে। কিছুক্ষণেই ঘুমের দেশে পাড়ি দেবে ও…
ছোট্ট সোনার নাড়ি যতদিন না পড়ে যায়, ততদিন পর্যন্ত জল ঢেলে স্নান করাবেন না। বা নাড়ি পড়ে যাওয়ার পর যদি জায়গাটা নরম থাকে, সেটা শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। ততদিন পর্যন্ত না হয় বাচ্চার গা স্পঞ্জ করিয়ে দিন বা ভেজা কাপড় দিয়ে মুছিয়ে দিন। নাড়ি পড়ে যাওয়ার পর আপনার বাচ্চা একদম তৈরি জলে ভিজে স্নান করার জন্য। এনে দিন ওকে একটা ছোট্ট বাথ টাব। বাথরুমেই যে স্নান করাতে হবে এমন কোনও মানে নেই। পরিচ্ছন্ন, নিরাপদ হালকা গরম যে কোনও জায়গাই শিশুর স্নানের আদর্শ জায়গা।
স্নানের জন্য বড়সড় বেসিনও ব্যবহার করতে পারেন আপনি। প্রথম প্রথম তুলতুলে ছানাকে সামাল দিতে বেসিনই হয়তো বেশি উপযোগী মনে হবে আপনার!
না, নিজেরা যে সাবান বা শ্যাম্পু ব্যবহার করেন, তা কখনই দেবেন না পুঁচকেটাকে। অনেক ভালো কোম্পানির বেবি সোপ এবং শ্যাম্পু পাওয়া যায় (যেমন, বেবি ডাভ (Baby Dove))। নিয়ে আসুন সেগুলোই।
বাচ্চার সাবান বা শ্যাম্পুতে যেন পারফিউম বা কোনও কৃত্রিম রং মেশানো না থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখুন। (উল্লেখ্য, নবজাতকের নমনীয় শরীরের কথা ভেবে এমনই সব প্রোডাক্ট এনেছে বেবি ডাভ (Baby Dove))
শিশুর স্নানের জল কখনই ঠান্ডা হওয়া উচিত না। ঈষদুষ্ণ গরম জলে খুদেটিকে স্নান করান। বাথ টাবে সোনার স্নানের জল ভরার পর নিজের কনুই ডুবিয়ে জলের তাপমাত্রা পরীক্ষা করে নিতে ভুলবেন না। এতে যেমন শিশুর ঠান্ডাও লাগবে না, আবার আরামদায়ক তাপমাত্রায় ও চনমনে হয়ে উঠবে।
পুঁচকে যাতে ভয় না পায়, তার জন্য আপনি নিজে জলের মধ্যে হাত ঢুকিয়ে, একটু জল ছিটিয়ে মজা করে ওর দিকে তাকিয়ে অঙ্গভঙ্গী করুন। জল দিয়ে স্নান করা যে কোনও ভয়ের কারণ নয়, উল্টে সে আরাম পাবে, এটা আপনার সন্তানকে বোঝানোর চেষ্টা করুন।
একজন মা হয়ে অন্য মায়েদের সঙ্গে নিজের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিতে চান? মায়েদের কমিউনিটির একজন অংশীদার হয়ে যান। এখানে ক্লিক করুন, আমরা আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করব।
null
null