দৃশ্য ১: মিনিট দশেকও হয়নি ১ বছরের খুদেটাকে ঘুম পাড়িয়ে একটু রোদ পোহাচ্ছেন; হঠাৎ ধুপ করে একটা আওয়াজ আর পরক্ষণেই চ্যাঁ করে চিৎকার। খাটের মাঝখানে শুইয়ে চারদিকে ৪/৫ টা বালিশের পাহারা বসিয়ে এসেছিলেন আপনি; তাতে কোনও কাজই হয়নি। দস্যি ঘুমের মধ্যেও সেই গড়িয়ে এসেছে খাটের ধারে এবং তারপর খাট থেকে সোজা মেঝেতে। (Ways To Stop A Toddler From Falling Out Of Bed)
দৃশ্য ২: রাতের মধ্যে দশবার উঠে দেখেন পাশে তিনি শান্তিতে ঘুমচ্ছেন কি না; আর প্রায়ই খুঁজে পান খাটের ধারে। মশারি টাঙিয়ে রাখলেও রক্ষা নেই। মশারিতে ঝুলে রয়েছে আপনার অতি আদরের সন্তানটি। (Stop Kids from Falling out of Bed) মেঝেতে পড়লো বলে! এত্ত বড় একখানা খাট দিলেও কেন যে ওই খাটের ধারে চলে যায় সে, এ আপনার বোঝার সাধ্যি নয়।
আপনারটিও কি ১ বছরের গণ্ডী পেরিয়েছে সবে সবে? হামা টানছে বা উপুড় হয়ে গড়িয়ে যেতে শিখেছে? নিজেকে নিয়ে জিমন্যাসটিক দেখানোর বড্ড শখ তার?
এদিকে দোলনা খাটে শুয়ে স্বস্তি নেই বলে নিজেদের বড় খাটে শোয়াচ্ছেন? তা হলে ওপরের ঘটনাগুলোর সাথে দিব্ব্যি মিল পাবেন নিজের।
ঘুমের মধ্যেই হোক বা খেলতে খেলতে; খাটের ধারে এসে ধুপধাপ মেঝেতে পড়ে যাওয়া বাচ্চাদের ক্ষেত্রে বড্ড সাধারণ ঘটনা। ওদের না আছে বোঝার শক্তি, না আছে বিচার ক্ষমতা; পড়ে গেলে যে ব্যথা পাবে সেটাই হয়তো মনে থাকে না ওদের।
এই নিয়েই মায়েরা সবসময় একটা চাপা অশান্তিতে ভোগেন। ঘুম পাড়িয়ে, খেলতে বসিয়েও শান্তি নেই মনে। বারবার ছুটে ছুটে দেখতে আসা! আর এখনকার ছোট্ট ছোট্ট পরিবারে সর্বক্ষণ বাচ্চা আগলানোর মানুষ পাওয়াও তো ভারী মুশকিল। এখন উপায়! (How to Keep a Toddler from Falling Out of a Bed)
বাড়ন্ত, ছটফটে বাচ্চার বারবার খাট থেকে পড়ে যাওয়া আটকাতে কীভাবে সাবধান হতে পারেন, তার কিছু উপায় বাতলে দিচ্ছি আমরা। আপনার বাচ্চাটি যদি নিদারুণ শান্তও হয়; তাও বলবো প্রতিবেদনটি পড়ে রাখুন। সাবধানের মার নেই জানেন তো?
#1. বাচ্চার খাট দেওয়ালে ঠেসিয়ে রাখুন: ঘরের একদম মাঝে খাট না রেখে একদিক দেওয়ালে ঠেসিয়ে রাখুন। অন্তত দুদিক থেকে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কাটা কমবে।
#2. বাচ্চা যে খাটে শোয়; তার নীচে নরম ম্যাটরেস জাতীয় কিছু পেতে রাখুন: বাচ্চাকে যে খাটে শোয়াবেন; তার নীচে নরম কম্বল বা ম্যাটরেস জাতীয় কিছু পেতে রাখুন। অসাবধানে যদি ও পড়েও যায়, নরম কিছুতে পড়লে আঘাত পাবে না। (Baby Falling from Bed: Prevention & Ways To Deal With It)
#3. রাতে ওকে নিজের কাছে রাখুন: রাতে বাচ্চাকে নিজের কাছে নিয়ে ঘুমোন। রাতের গভীর ঘুম বাচ্চার জন্য যতটা দরকার, আপনার জন্যও কিন্তু তাই। বারবার বাচ্চা কী করছে দেখতে উঠলে আপনার যে কিছুতেই ভালো বিশ্রাম হবে না; এ তো নিশ্চিত। তাই নিজের পাশে রাখুন ওকে।
আরও পড়ুন: রাতভর শিশুর নিশ্চিন্ত ঘুমের ৭টি সহজ টিপস! সেই সাথে জেনে নিন, পর্যাপ্ত ঘুম জরুরি কেন?
#4. কিনে দিন ছোট্ট একখানা খাট: ওপরের সব সমাধানগুলি মোটামুটি ভাবে সাবধান করার জন্য কাজে লাগলেও, স্থায়ী সমধান কিন্তু নয়। স্থায়ী ও নিশ্চিন্ত সমাধান চাইলে খুদের জন্য কিনে দিন ছোট্ট একখানা খাট। এই খাট বা ক্রিব বাড়ন্ত বাচ্চাদের কথা মাথায় রেখেই বিশেষভাবে তৈরি। ক্রিবের চারদিকটা বেশ উঁচু করা থাকে; তাই কোনও ভাবেই খাট থেকে পড়ার আশঙ্কা থাকে না। (How to Stop a Toddler From Falling Out of Bed)
আবার বাচ্চার কথা মাথায় রেখেই আধুনিক ক্রিবগুলোতে নানা ধরনের ছবি, কার্টুন ইত্যাদি এঁকে দেওয়া হয় বা উজ্জ্বল রং করা থাকে। বাচ্চারা এই ধরনের ছবি বা রং খুবই পছন্দ করে বলে ক্রিবের ঘেরাটোপে থাকতেও ওর কোনও সমস্যা হয় না।
#5. খাট যেন পাকাপোক্ত হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন: বাচ্চা যে খাটে থাকবে, সেই খাট যেন পাকাপোক্ত হয় বা বেশি নড়াচড়া না করে সেদিকে খেয়াল রাখুন। তা সে ক্রিবই হোক বা সাধারণ খাট; ভালো করে পরীক্ষা করে নিতে ভুলবেন না। শুধু তাই নয়। কিছুদিন অন্তর পরীক্ষা করাও জরুরি। (How to Keep Your Toddler Safe in Bed)
#6. গার্ড রেল কিনে আনুন: গার্ড রেল কিন্তু সত্যিই খুব কাজের জিনিস। খাটের ধারে লাগিয়ে দেওয়ার মতো রেলিংকেই গার্ড রেল বলে। এই গার্ড রেল আপনি ইচ্ছামতো খাটের ধারে লাগাতে পারেন আবার যখন প্রয়োজন হবে না, তখন খুলে দিতেও পারেন। বাচ্চার জন্য আলাদা খাট কেনার ইচ্ছা না হলে কিনে ফেলতেই পারেন এই গার্ড রেল। অনলাইনে গুচ্ছের অপশন পাবেন আর নয়তো চেনাজানা কারপেনটারকেই ডাক পাঠান।
মনে রাখুন কিছু কথা:
আরও পড়ুন: বিছানায় বাচ্চার প্রস্রাব করা একরকমের ব্যাধি; জেনে নিন কারণ ও প্রতিকার!
একজন মা হয়ে অন্য মায়েদের সঙ্গে নিজের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিতে চান? মায়েদের কমিউনিটির একজন অংশীদার হয়ে যান। এখানে ক্লিক করুন, আমরা আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করব।
null
null